বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

সংশোধিত এডিপি প্রণয়নে ১৪ দফা নির্দেশনা

সংশোধিত এডিপি প্রণয়নে ১৪ দফা নির্দেশনা

স্বদেশ ডেস্ক:

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে পড়েছে সরকারের খরচ কমানো নীতির প্রভাব। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে মাত্র ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ এডিপি। করোনা মহামারীর মধ্যেও এর চেয়ে বেশি হারে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত সাত বছরের মধ্যে এই হার সর্বনিম্ন।

চলতি অর্থবছরের বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। অর্থসংকট মোকাবিলায় এবারই প্রথম বাজেট সংশোধনে কৃচ্ছ্রতানীতি অবলম্বন করা হচ্ছে। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রণয়নে ১৪ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা সীমিত রাখতে হবে এবং মূল সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দহীন কোনো প্রকল্প রাখা যাবে না। অগ্রাধিকার বাছাই করে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দিতে হবে। এডিপিবহির্ভূত যেসব প্রকল্প ইতোমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে এবং যেসব প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেসব প্রকল্প সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

চলতি অর্থবছরে বাস্তবায়ন কাজ শেষ হবে এমন সব প্রকল্পের বিপরীতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখতে হবে। বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রকল্প সহায়তার অংশ সম্পূর্ণ ব্যয় করা যাবে, তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ের অংশে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখতে হবে। অন্যদের মধ্যে বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা-উত্তর পুনর্বাসন সম্পর্কিত প্রকল্প এবং এলাকা/অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পগুলোকে সংশোধিত এডিপিতে অন্তর্ভুক্তকরণে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
বাজেট পরিপত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সংশোধিত পরিচালন ব্যয় প্রণয়নে সাত দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিচালন ব্যয় প্রাক্কলনে পূর্ববর্তী দুই (২০১৯-২০ ও ২০২০-২১) অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের এবং চলতি অর্থবছরের প্রথম চার-পাঁচ মাসের ব্যয়ের ধারা বিবেচনায় নিতে হবে। তবে শুধু বেতনভাতা খাতে ব্যয়ের হিসাব প্রণয়নে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের প্রকৃত ব্যয়ের হিসাব বিবেচনায় নিতে হবে। এ ছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া সরবরাহ ও সেবা খাতে অন্তর্ভুক্ত কোনো আইটেমের বরাদ্দ বাড়ানো যাবে না এবং মূল বাজেটে সংস্থান নেই, এমন কোনো সম্পদ সংগ্রহের জন্য সংশোধিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা যাবে না।

পরিপত্রে কৃচ্ছ্রতাসাধনের বিষয়ে আরও বলা হয়, ‘পরিচালন বাজেটের অধীন ভূমি অধিগ্রহণ’ ও ‘যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি (কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক’, ‘বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি’, ‘আসবাবপত্র ও ‘অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি’) খাতে ব্যয় স্থগিত থাকবে এবং ভবন ও স্থাপনাগুলো (‘আবাসিক, ‘অনাবাসিক, অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা’) খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের বিপরীতে নতুনভাবে কার্যাদেশ প্রদান করা যাবে না। ইতোমধ্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে কেবল এ রূপ ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় করা যাবে না। এসব খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত থেকে এসব খাতে পুনঃউপযোজন করা যাবে না।

পরিপত্রে বলা হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার অবশ্যই মূল বাজেটে উল্লিখিত মোট ব্যয়সীমার (পরিচালন ও উন্নয়ন) মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে এবং কোনোভাবেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করা যাবে না। একই সঙ্গে উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে কোনো অর্থ অ-ব্যয়িত থাকবে বলে অনুমিত হলে ওই অর্থ কোনোক্রমেই পরিচালন বাজেটে স্থানান্তর করা যাবে না।

গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। আর বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্রে আপ্যায়ন ব্যয়, ভ্রমণ ব্যয়, মনিহারি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। সংশোধিত বাজেট প্রণয়নে কোনোভাবেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রের আলোকে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্দেশ অনুযায়ী, নতুন বা প্রতিস্থাপক হিসেবে সব ধরনের যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ রাখা এবং সরকার ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে সবপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আমাদের সময়কে বলেন, ‘বাস্তবতার আলোকে এসব পরিবর্তন করতেই হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877